নাউজুবিল্লাহ অর্থ, গুরুত্ব এবং দোয়া | বিস্তারিত ইসলামিক ব্যাখ্যা
নাউজুবিল্লাহ ! অর্থ, গুরুত্ব এবং দোয়া বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনারা যারা "নাউজুবিল্লাহ ! অর্থ, গুরুত্ব এবং দোয়া | বিস্তারিত ইসলামিক ব্যাখ্যা" এই সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, নাউজুবিল্লাহ এর অর্থ কী, কেন এটি বলা হয়, এর ইসলামিক গুরুত্ব এবং দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত। মুসলিমদের জীবনে নাউজুবিল্লাহ উচ্চারণের সঠিক ব্যবহার ও গুরুত্ব এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
ভূমিকাঃ
"নাউজুবিল্লাহ" একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক শব্দগুচ্ছ যা সাধারণত মুসলিমরা ব্যবহার করেন কোনো খারাপ বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে। এটি মূলত "আউযু বিল্লাহ" বাক্যাংশের সঙ্গে সম্পর্কিত, যার অর্থ হলো "আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।" এটি কোরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং রাসুল (সা.)-এর হাদিসে পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ কোরআনে বর্ণিত কিয়ামতের নামসমূহ ও তাদের অর্থ ! একটি বিশদ আলোচনা
নাউজুবিল্লাহর অর্থ ও প্রাসঙ্গিকতাঃ
"নাউজুবিল্লাহ" শব্দটি আরবি ভাষার "আউযু" (আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি) এবং "বিল্লাহ" (আল্লাহর প্রতি) শব্দ থেকে এসেছে। এটি সাধারণত তখন বলা হয় যখন কেউ কোনো খারাপ কাজ, চিন্তা বা কথার কথা উল্লেখ করে এবং আল্লাহর কাছে এর থেকে রক্ষা চান।
উদাহরণস্বরূপঃ
যদি কেউ শিরক বা আল্লাহর বিরোধী কোনো কথার কথা উল্লেখ করেন, তখন এটি বলা হয়।
যখন কোনো ব্যক্তি নিজেদের খারাপ চিন্তা বা শয়তানের প্ররোচনা থেকে মুক্ত হতে চান।
নাউজুবিল্লাহ সম্পর্কিত দোয়াঃ
আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনার জন্য অনেক সুন্দর দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো:
১। আউযু বিল্লাহ দোয়াঃ
এই দোয়া কোরআনের সূরা আন-নাহল (১৬:৯৮) থেকে নেওয়া হয়েছেঃ
"আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজীম"
অর্থ: আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
২। আল্লাহর আশ্রয়ের জন্য বিশেষ দোয়াঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ، وَمِنْ هَمَزَاتِهِ وَنَفَثَاتِهِ وَنَفْخِهِ
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাশ শাইতানির রাজীমি, ওয়া মিন হামাযাতিহি ওয়া নাফাসাতিহি ওয়া নাফখিহি।"
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শয়তানের প্ররোচনা, ফুসফুসা এবং প্রভাব থেকে।
নাউজুবিল্লাহর গুরুত্বঃ
১। খারাপ চিন্তা থেকে রক্ষা পাওয়াঃ
এটি মনের নেতিবাচকতা এবং শয়তানের প্ররোচনা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।
২। আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা প্রকাশঃ
"নাউজুবিল্লাহ" বলতে আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা প্রকাশ করা হয়।
৩। শিরক ও পাপ থেকে মুক্তিঃ
এটি শিরক, পাপ এবং আল্লাহর নাফরমানি থেকে নিজেকে রক্ষা করার একটি মাধ্যম।
নাউজুবিল্লাহর ব্যবহারিক দিকঃ
অশুভ থেকে বাঁচতেঃ যদি কেউ শয়তানের প্ররোচনা অনুভব করেন, তখন "নাউজুবিল্লাহ" বা "আউযু বিল্লাহ" বলা উচিত।
অন্যদের সতর্ক করতেঃ কারো ভুল কাজের কথা শুনলে এই বাক্যটি ব্যবহার করে নিজেদের সতর্কতা এবং আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ রিজিক বৃদ্ধির জন্য প্রমাণিত আমল ! আয়-উপার্জনে বরকত আনুন
উপসংহারঃ
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, "নাউজুবিল্লাহ" শুধু একটি বাক্য নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া যা আমাদের আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করে। এটি শয়তানের প্ররোচনা এবং খারাপ চিন্তা থেকে বাঁচার জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়। মুসলিমদের উচিত এটি মনেপ্রাণে হৃদয়ে ধারণ করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা।
আল্লাহ আমাদের সকলকে শয়তানের প্ররোচনা এবং অন্যায় কাজ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
[আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে অন্যদের সচেতন করতে পারেন]
কীভাবে এই আর্টিকেলটি আরও উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে আপনার কোনো পরামর্শ থাকলে দয়া করে জানান।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url