বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কি? কাদের জন্য? বিস্তারিত গাইড ২০২৫

আপনারা যারা "বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কি? কাদের জন্য? বিস্তারিত গাইড ২০২৫" সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কাদের জন্য? কিভাবে আবেদন করবেন, কোথায় পড়া যাবে, চাকরিজীবীদের জন্য সুবিধা - বিস্তারিত গাইড সম্পর্কে।

চলুন এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কি? কাদের জন্য? বিস্তারিত গাইড ২০২৫ সম্পর্কে।

---

সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স বলতে কী বোঝায়?

সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স হলো এমন একটি মাস্টার্স প্রোগ্রাম, যেখানে ক্লাস হয় মূলত বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে, যেন চাকরিজীবী বা ব্যস্ত মানুষরাও মাস্টার্স করতে পারেন। অনেকেই “সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স” শুনে ভাবে এটা বুঝি আলাদা ডিগ্রি। না ভাই, এটা মাস্টার্স ডিগ্রিরই একটা টাইম শিফটেড ভার্সন, যারা দিনের বেলা ব্যস্ত, তারা সন্ধ্যায় পড়াশোনা করতে পারে।

মানে-আপনি যদি দিনের বেলা অফিস করেন, দোকান চালান, ব্যবসা করেন কিংবা অন্য কোনো কারণে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যস্ত থাকেন,তারপরেও আপনি  মাস্টার্স করতে পারবেন। সন্ধ্যায় ক্লাস হয়, (সাধারণত বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা-৯টা)।সপ্তাহে ৩-৪ দিন বা শুধুমাত্র শুক্র-শনিবার (ইউনিভার্সিটি ভেদে ভিন্ন হতে পারে)। একই সার্টিফিকেট (Master’s Degree) দেওয়া হয়, যেমন Regular মাস্টার্সে দেওয়া হয়। ক্লাস চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসেই (বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে)

আরো পড়ুনঃ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি গাইড - ২০২৫ 

---

কে/কারা করতে পারে এই কোর্স?

এই কোর্সটা মূলত চাকরিজীবীদের জন্য ডিজাইন করা। তবে কেউ যদি নিজের ব্যবসা বা অন্য কোনো ব্যস্ততার জন্য ফুল টাইম মাস্টার্স করতে না পারে, তারাও এই কোর্সটা করতে পারে। সংক্ষেপে, সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স মানেই - ব্যস্ত মানুষের জন্য পড়াশোনার সুযোগ, সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়ানোর পথ। যেমনঃ

• চাকরিজীবী (সরকারি বা বেসরকারি)

• ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা

• যারা সকালে ব্যস্ত কিন্তু মাস্টার্স করতে চান

• কেউ কেউ নিয়মিত পড়াশোনার সুযোগ না পেয়ে evening অপশন বেছে নেন

উপকারিতাঃ

• চাকরি/ব্যবসা চলাকালেও মাস্টার্স করা যায়

• ক্যারিয়ারে প্রমোশন বা নতুন সুযোগ তৈরি হয়

• শিক্ষকতা/সরকারি চাকরি/উচ্চশিক্ষায় কাজে লাগে

• যারা gap দিয়েছে পড়ালেখায়, তাদের জন্য দারুণ সুযোগ

প্রয়োজনীয়তাঃ

• একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রি

• কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ২য় শ্রেণি বা CGPA ২.৫ থাকতে হয়

• চাকরিজীবীদের জন্য অভিজ্ঞতা সনদ (অনেক ক্ষেত্রে)

---

কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স হয়?

বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোর্স চলে। নিচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হলোঃ

• ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (Evening MBA, EMBA, Evening MSS)

• রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (Evening MBA, MSS, LLM)

• চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ট

• জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

• জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Masters Professional)

• প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি (AIUB, NSU, BRAC সহ অনেকেই)

কবে কবে ভর্তি নেয়?

সাধারণত বছরে এক বা দুইবার ভর্তি নেওয়া হয়। যেমনঃ

• জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি

• জুলাই-আগস্ট

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রফেশনাল ভর্তি সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে হয়।

---

ভর্তি প্রক্রিয়া কেমন?

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পদ্ধতি আছে। সাধারণভাবে যা লাগেঃ

1. অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ

2. আবেদন ফি প্রদান (৫০০-১০০০ টাকা)

3. ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ (কিছু ক্ষেত্রে)

4. ভর্তি সাক্ষাৎকার (ইন্টারভিউ)

5. অফার লেটার ও কোর্স ফি জমা দিয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা

---

খরচ কেমন?

এটা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিপার্টমেন্ট ভেদে ভিন্ন। তবে সাধারণত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু কম, আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে একটু বেশি।

---

ক্লাস কখন হয়?

সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্সের ক্লাস সাধারণত হয়ঃ

• সন্ধ্যা ৫টা থেকে রাত ৮টা/৯টা

• শুক্র-শনিবার ফুল ক্লাস (কিছু কোর্সে)

এর মানে, অফিস শেষ করেও ক্লাসে অংশ নেওয়া সম্ভব।

---

কোন কোন সাবজেক্টে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স হয়?

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন ভিন্ন ডিপার্টমেন্টে এই প্রোগ্রাম চলে। যেমনঃ

• MBA (Master of Business Administration)

• MPA (Master of Public Administration)

• MSS in Sociology, Political Science, Economics

• LLM (Master of Law)

• English, Bangla, History, Islamic Studies

• Computer Science & IT (কিছু প্রাইভেট ভার্সিটিতে)

---

চাকরিজীবীদের জন্য কেন উপকারী?

এই প্রোগ্রাম বিশেষ করে চাকরিজীবীদের কথা মাথায় রেখেই ডিজাইন করা। কারণঃ

• দিনের বেলা চাকরি, সন্ধ্যায় ক্লাস

• ছুটির দিনে ক্লাস, কাজের ক্ষতি হয় না

• পেশাগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগে

• উচ্চতর ডিগ্রির মাধ্যমে প্রমোশন, সুযোগ বাড়ে

• শিক্ষকতা বা বিসিএস পরীক্ষার জন্য মাস্টার্স দরকার-এটা পূরণ হয়

---

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

• সব Evening প্রোগ্রামই UGC অনুমোদিত কি না, আগে যাচাই করুন

• ভর্তি হওয়ার আগে কোর্স কাঠামো ভালোভাবে বুঝে নিন

• ব্যালেন্স করতে পারবো কি না-চাকরি, পরিবার, ক্লাস-এটা ভেবে নিন

---

উপসংহারঃ

আপনি যদি চাকরিজীবী হন, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান, আর ফুল টাইম মাস্টার্স সম্ভব না হয়-তাহলে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স আপনার জন্য সেরা অপশন হতে পারে।

যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, বিজ্ঞপ্তি এবং পূর্ববর্তী শিক্ষার্থীদের রিভিউ দেখে নিন

আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে, শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে—বিশেষ করে যাদের অফিসের পরে পড়ার ইচ্ছা আছে।

আর এমন আরও লেখা পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।