হিংসা থেকে বাঁচার দোয়া ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ – কুরআন ও হাদিসের আলোকে করণীয়

হিংসা থেকে বাঁচার দোয়া ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

আপনারা যারা "হিংসা থেকে বাঁচার দোয়া ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ" সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, হিংসা বা হিংসাপ্রবণতা থেকে রক্ষা পেতে কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত দোয়া, করণীয় এবং ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি। ঈমান রক্ষায় ও অন্তরের শান্তির জন্য পড়ুন বিস্তারিত গাইড।

হিংসা থেকে বাঁচার দোয়া ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ
চলুন এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, হিংসা থেকে বাঁচার দোয়া ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে বিস্তারিত।

ভূমিকাঃ

ইসলাম শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। এটি মানুষের হৃদয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ও জীবনে সঠিক পথনির্দেশ দিতে অত্যন্ত কার্যকর। হিংসা মানুষের অন্তরে একটি মারাত্মক ব্যাধি যা আত্মিক, মানসিক, এবং সামাজিক ক্ষতি করে। তাই, হিংসা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের ইসলামী নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ হালাল-হারাম বুঝে ইবাদত করতে হবে – একজন মু’মিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা

হিংসার সংজ্ঞা ও প্রভাবঃ

হিংসা এমন এক অভ্যাস যা অন্যের ভালো দেখে নিজের মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি করে এবং তার প্রতি ক্ষতিকর মনোভাব তৈরি করে। এটি মানুষের মনোবল নষ্ট করে এবং সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। হিংসা কেবলমাত্র সম্পর্কের অবনতি ঘটায় না বরং ব্যক্তির আত্মিক বিকাশেও বাধা দেয়।

কুরআন ও হাদিসে হিংসা সম্পর্কে নির্দেশনাঃ

আল্লাহ্‌ তায়ালা কুরআনে হিংসা পরিত্যাগের প্রতি জোর দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের একটি আয়াতে বলা হয়েছেঃ

"আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।"

(সুরা ফালাক, আয়াত ৫)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, হিংসা এমন এক অনিষ্ট যা থেকে আমাদের রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ

"তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করো না, এবং ঘৃণা করো না। বরং আল্লাহর বান্দারা ভাই ভাই হয়ে যাও।"

(সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

হিংসা থেকে বাঁচার জন্য দোয়াঃ

ইসলামে, আল্লাহর কাছে দোয়া করা সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তির সর্বোত্তম উপায়। হিংসা থেকে বাঁচার জন্য নীচের দোয়াগুলি পড়া যেতে পারে:

১। সুরা ফালাকঃ

পুরো সুরাটি পড়া অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষত, এই আয়াতটি বেশি পড়ুনঃ

"আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।" (সুরা ফালাক, আয়াত ৫)

২। আয়াতুল কুরসিঃ

প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পরে আয়াতুল কুরসি পাঠ করা হিংসা ও অন্যান্য অনিষ্ট থেকে রক্ষার ঢাল হিসেবে কাজ করে।

৩। নিম্নোক্ত দোয়াঃ

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি হাসিদিন ইজা হাসাদ।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

আরো পড়ুনঃ যে সব ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না - ইসলামী দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ

হিংসা এড়াতে কার্যকর উপায়ঃ

১। আল্লাহর উপর ভরসা করুনঃ

যেকোনো কষ্ট বা বিপদ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখুন।

২। ধৈর্য ধরুন ও ক্ষমা করুনঃ

যারা আপনার প্রতি হিংসা পোষণ করে তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হন।

৩। সৎকর্ম ও দানঃ

সৎকর্ম ও দানের মাধ্যমে আপনার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করুন এবং অন্যদের ভালোবাসার জন্য উদ্বুদ্ধ হোন।

৪। ধার্মিক সঙ্গ বেছে নিনঃ

যারা আল্লাহভীরু, তাদের সাথে সময় কাটান।

উপসংহারঃ 

হিংসা মানুষের জীবনে একটি ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা, নিয়মিত দোয়া করা এবং ইসলামের নির্দেশনা মেনে চলা অপরিহার্য। যদি আমরা আমাদের অন্তরে ভালোবাসা এবং ক্ষমার গুণাবলী ধারণ করি, তবে হিংসার মতো নেতিবাচক অনুভূতি আমাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারবে না।

আপনি যদি আরও এই ধরনের গাইড, টিপস বা টিউটোরিয়াল পড়তে চান, তাহলে নিয়মিত চোখ রাখুন 
আমাদের সাইটে  https://www.baneswarit.com/ এবং 
আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করুনঃ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url