২১ ফেব্রুয়ারি ! আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

২১ ফেব্রুয়ারি ! আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

আপনারা যারা "২১ ফেব্রুয়ারি ! আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব" সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল ও স্মরণীয় দিন। এই দিনে বাংলার সূর্যসন্তানরা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের এই আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, যা আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হয় সম্পর্কে

২১ ফেব্রুয়ারি ! আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

চলুন আর দেরি না করে আজকের আর্টিকেলে আমরা জেনে নেই, মুখে বয়সের ছাপ স্পষ্ট হওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত।

ভূমিকাঃ

২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বাঙালি জাতির গৌরবময় ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে প্রাণ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) সাহসী ছাত্ররা। ভাষার দাবিতে আন্দোলন করে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার প্রমুখ। জাতিসংঘ ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা আজ বিশ্বব্যাপী ভাষার বৈচিত্র্য ও সংরক্ষণের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়। এই দিবস শুধুমাত্র শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন নয়, বরং ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার প্রতিজ্ঞা নেওয়ার দিন।

আরো পড়ুনঃ ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মুল দ্বন্দ্ব কিসের? 

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটঃ

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পাকিস্তান দুটি অংশে বিভক্ত হয়—পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমান পাকিস্তান) এবং পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাংলা ভাষায় কথা বললেও ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে।

ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাঃ

ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হলে শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার উদ্যোগ নেয়। সেই জন্য ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যা বাতিল করা হয়। এর প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালে ছাত্ররা ঢাকায় প্রথম প্রতিবাদ শুরু করে এবং ১১ মার্চ ধর্মঘট ডাকা হয়। ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ২১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করলে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়।

এরপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলেও ছাত্ররা তা অমান্য করে মিছিল বের করে। পুলিশ মিছিলের উপর গুলি চালালে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা আরও অনেকেই শহীদ হন। এ ঘটনার পর ২২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এতে করে আন্দোলন আরও তীব্র হয় এবং পুলিশের দমননীতি চলতে থাকে। অবশেষে ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এই আন্দোলন শুধু ভাষার অধিকার আদায়ের নয়, বরং একটি জাতির আত্মপরিচয়ের দাবি প্রতিষ্ঠার প্রতীক। ২১ ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত, যা বিশ্বব্যাপী ভাষার অধিকার ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও মাতৃভাষা দিবসঃ

২১ ফেব্রুয়ারি, বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের অনন্য এক দিন, যা বিশ্বজুড়ে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসেবে পালিত হয়। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশের প্রস্তাবে এই দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়। এর ফলে ভাষার জন্য বাঙালির সংগ্রাম ও শহীদদের আত্মত্যাগ বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পায়। এই দিনটি এখন বিশ্বের নানা দেশে ভাষার বৈচিত্র্য, সংরক্ষণ ও মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদযাপিত হয়। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে, যা প্রতিটি জাতিকে তাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার অনুপ্রেরণা জোগায়।

২১ ফেব্রুয়ারির তাৎপর্যঃ

২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, ভাষা ভালোবাসা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার এক অনন্য নিদর্শন। এই দিনটি শুধুমাত্র একটি তারিখ নয়, বরং আমাদের মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দিনটি আজ বিশ্ববাসীর কাছেও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে একে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করে। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং জাতির পরিচয় ও সংস্কৃতির প্রতীক। তাই এ দিনটি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা ও চর্চার প্রতিজ্ঞা নেওয়ার একটি বিশেষ উপলক্ষ।

  • মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতীক।
  • ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং সংরক্ষণের অনুপ্রেরণা।
  • বিশ্বব্যাপী ভাষার বৈচিত্র্য ও সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরা।

আরো পড়ুনঃ জুলাই বিপ্লব ! আধুনিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

উপসংহারঃ 

২১ ফেব্রুয়ারি শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক দিন। এটি ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার অনন্য দৃষ্টান্ত। তাই, এই দিনটি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের মাতৃভাষার চর্চা, সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে।

আরো আর্টিকেল পড়তে চাইলে জানাতে পারেন। এরকম আর্টিকেল পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করুন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন।ধন্যবাদ

https://www.facebook.com/profile.php?id=61577238192159

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url