মোবাইলে কত জি.বি র‌্যাম হলে ভালো হয়? জেনে নিন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আদর্শ র‌্যাম কত GB হওয়া উচিত।

আপনারা যারা "ফোনে কত জি.বি র‌্যাম হলে ভালো হয়? আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আদর্শ র‌্যাম কত GB হওয়া উচিত!" এই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, আপনার মোবাইলে কত জি.বি র‌্যাম দরকার আপনার ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী? আরো জানতে পারবেন গেমিং, ভিডিও দেখা, অনলাইনে ক্লাস করা, অফিসের কাজ করা, ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য আপনার ফোনে কত GB র‌্যাম হওয়া উচিৎ সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।

চলুন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, আপনার ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী আপনার মোবাইলে কত GB র‌্যাম আদর্শ হবে।

মোবাইলে কত র‌্যাম হলে ভালো? জেনে নিন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আদর্শ র‌্যাম কত।

বর্তমানে বাজারে স্মার্টফোনের সংখ্যা যত, তার চেয়ে বেশি বিভ্রান্তি। ফোন কিনতে গেলে অনেকেই একটাই প্রশ্ন করেন, “ভাই, এই ফোনে র‌্যাম কতো?” কেউ বলেন ৪ জিবি র‌্যামেই চলে যাবে, কেউ বলেন ৮ জিবির নিচে কিছুই হবে না। কিন্তু আসলেই কি তাই? আসলে ফোনে কত র‌্যাম দরকার, সেটা নির্ভর করে আপনি ফোনটি কী কাজে ব্যবহার করবেন তার উপর। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো-ফোনে র‌্যামের কাজ কী, কত জি.বি র‌্যাম আপনার জন্য আদর্শ, আর বাজেট অনুযায়ী আপনার কত জি.বি র‌্যাম বেছে নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আয় করার ১০টি নির্ভরযোগ্য উপায় (২০২৫) সম্পর্কে জেনে নিন।

র‌্যাম কী? ফোনে এর কাজ কী?

র‌্যাম (RAM) মানে হলো Random Access Memory। এটা আপনার ফোনের অস্থায়ী মেমোরি, যেখানে অ্যাপগুলো চালানোর সময় ডেটা সংরক্ষিত থাকে। র‌্যাম যত বেশি হবে, ফোন তত বেশি অ্যাপ একসাথে খুলতে পারবে এবং মসৃণ পারফর্ম দিতে পারবে।

সহজভাবে বললে - র‌্যাম একটা টেবিলের মতো, যেখানে আপনি একসাথে যত বেশি জিনিস রাখবেন, টেবিল তত বড় হতে হবে। না হলে পুরানো জিনিস সরিয়ে নতুন জিনিস রাখতে হবে, ফলে সময় বেশি লাগবে। তাই ফোন কেনার আগে অবশ্যই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী র‌্যাম দেখে শুনে বুঝে নিবেন। 

আপনি কী ধরনের ইউজার? দেখে নিন কোন র‌্যাম আপনার জন্য

১। সাধারণ ইউজার (Basic User)

যারা ফোনে শুধু মাত্র কল করেন, SMS করেন, ফেসবুক দেখেন, ইউটিউবে কিছু ভিডিও দেখেন, হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জার ব্যবহার করেন-তাদের জন্য ৩ থেকে ৪ GB র‌্যাম যথেষ্ট। যদি ৪ থেকে ৬ জিবি র‍্যাম হয় তাহলে একটু ভালো হয়।

উদাহরণ ফোনঃ

• Infinix Smart 8 (4GB RAM)
• realme C30 (3GB/4GB RAM)

২। অনলাইন ক্লাস/স্টুডেন্ট ইউজার

উদাহরণ ফোনঃ

• Samsung Galaxy A14 (4/6GB RAM)
• Redmi 13C (6GB RAM)

৩। মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার

যারা ভিডিও এডিটিং করেন, রিল তৈরি করেন, টিকটক করেন, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, ফেসবুক ও ইউটিউব নিয়মিত ব্যবহার করেন, তারা যেনো ফোনে একাধিক অ্যাপ চালাতে পারেন সেইজন্য ৬ থেকে ৮ GB র‌্যাম হলে ভালো হয়।

উদাহরণ ফোনঃ

• vivo Y27
• POCO M6

৪। গেমার ও হেভি ইউজার

যারা PUBG, Free Fire, Call of Duty, Genshin Impact ইত্যাদি গেম খেলেন-তাদের জন্য ৮ GB বা তার বেশি অর্থাৎ ৮ থেকে ১৬ জিবি  র‌্যাম আবশ্যক।

উদাহরণ ফোনঃ

• OnePlus Nord CE 3 Lite (8GB RAM)
• iQOO Z9 (8GB RAM)

শুধু কি র‌্যাম হলেই হবে? প্রসেসর ও স্টোরেজও গুরুত্বপূর্ণ!

অনেক সময় ৮GB র‌্যাম থাকা ফোনেও ল্যাগ করে। কারণ র‌্যামের সাথে সাথে প্রসেসর (CPU), স্টোরেজ টাইপ (UFS বা eMMC) এবং সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে।

• MediaTek Helio G88, Snapdragon 695 - ভালো মিড রেঞ্জ প্রসেসর।
• UFS 2.2 বা 3.1 স্টোরেজ - দ্রুত অ্যাপ লোডিং এর জন্য ভালো।
• Stock Android বা ভাল অপটিমাইজড UI - র‌্যাম বাঁচায়।

বাজেট অনুযায়ী র‌্যাম রিকমেন্ডেশন (২০২৫ সালে)

২০২৫ সালের নতুন ট্রেন্ডঃ ভার্চুয়াল র‌্যাম (Virtual RAM)

আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালে সেরা বাজেট স্মার্টফোন! ১৫ হাজার টাকার নিচে শীর্ষ ১০ ফোনের তালিকা।

উপসংহারঃ আদর্শ র‌্যাম কত GB হওয়া উচিত

প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন, র‌্যাম কোনো ম্যাজিক না-আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিলেই পারফরম্যান্স ভালো পাবেন। আপনি যদি শুধু ইউটিউব বা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তাহলে ৮ GB র‌্যাম ফোন নিয়ে লাভ নেই। আবার গেমার হলে ৩ GB র‌্যামে গেম চালু হলেও ল্যাগ করবে।

তাই ফোন কেনার আগে নিজে জানুন আপনি কোন ক্যাটাগরির ইউজার, তারপর ঠিক করুন ফোনে র‌্যাম কত GB হওয়া উচিত। বাজেট, ব্র্যান্ড ও অন্যান্য ফিচার দেখে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিন।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধুর সাথে, যারা নতুন ফোন কেনার চিন্তায় আছেন। আপনি চাইলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন-আপনার ফোনে কত র‌্যাম আছে, আর পারফরম্যান্স কেমন পাচ্ছেন।