কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিন।
বর্তকমান যুগে আমরা সবাই মোটামুটি ভাবে কম্পিউটারের সাথে জড়িত। কিন্তু আমরা অধিকাংশ লোকই জানিনা এই কম্পিউটার আসলে কত প্রকারের হতে পারে। তাই আসুন আমরা এই কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা নিয়ে নিই, যা আমাদের জানা দরকার।
চলুন এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত।
সূচীপত্রঃ কম্পিউটারের প্রকারভেদ।
- ভূমিকাঃ কম্পিউটারের প্রকারভেদ।
- অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer)
- ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
- হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybride Computer)
ভূমিকাঃ কম্পিউটারের প্রকারভেদ
বর্তমান যুগ তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, এমনকি বিনোদন-সব ক্ষেত্রেই এখন কম্পিউটার অপরিহার্য একটি অংশ। কাজের ধরন, ক্ষমতা ও আকার অনুসারে কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। প্রতিটি প্রকারের কম্পিউটার নির্দিষ্ট কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি, যেমন-গবেষণাগারে ব্যবহৃত সুপার কম্পিউটার, অফিসে ব্যবহৃত মিনি কম্পিউটার বা ঘরে ব্যবহৃত পার্সোনাল কম্পিউটার। তাই কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানা আমাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করে এবং সঠিক প্রয়োগে সাহায্য করে। কম্পিউটারের গঠন, আকার ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রধানত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
অ্যানালগ কম্পিউটারঃ (Analog Computer)
'অ্যানালজী' শব্দ থেকে 'অ্যানালগ' শব্দটির উৎপত্তি। চাপ, তাপ, রোধ, তরলের প্রবাহ ইত্যাদি উঠা নামা বা হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপের জন্য মে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাকে অ্যানলগ কম্পিউটার (Analog Computer) বলে। আ্যানালগ কম্পিউটার তার কাজের ফলাফল সাধারণত কাঁটার সাহায্যে প্রকাশ করে। এছাড়াও প্লওটআর বা গ্রাফ আকারেও প্রকাশ করে থাকে।
ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
"ডিজিট" শব্দ থেকে "ডিজিটাল" শব্দটির উৎপত্তি। মে সকল কম্পিউটার ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে তাকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলে। ডিজিটাল কম্পিউটার বাইনারি ভিজিট (0, ১) এর মাধ্যমে কাজ করে থাকে। বর্তমানে আমরা মে সকল কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি তার অধিকাংশই ডিজিটাল পদ্ধতির কম্পিউটার। আকার ও কার্যপ্রণালির দক্ষতাভেদে ডিজিটাল কম্পিউটারকে চার ভাগে ভাগ করা যায়।
- (ক) সুপার কম্পিউটার (Super Computer)
- (খ) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainfriem Computer)
- (গ) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)
- (ঘ) মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer)
(ক) সুপার কম্পিউটার (Super Computer)ঃ অত্যান্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন, শক্তিশালী ও অধিক কাজ করতে সক্ষম বৃহৎ আকৃতির কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটার প্রতি সেকেন্ডে ১00 কোটি বা তার চেয়ে বেশি গাণিতিক কাজ সম্পাদনে সক্ষম। খনিজ তেল অনুসন্ধান, পারমানবিক চুল্লি্র নিয়ন্ত্রণ, বহুজাতিক কোম্পানি, বৈঙ্গানিক গবেষণা, মহাকাশ গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ, আবহাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করা প্রভৃতি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। CRAY-1,SRPER-SXII,CYBER-205 ইত্যাদি কয়েকটি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ।
(খ) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainfriem Computer) ঃ
গতি, আকার -আকৃতি এবং ধারণক্ষমতা সুপার কম্পিউটার থেকে কম ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটারে একাধিক ইনপুট -আউটপুট ডিভাইস আছে যার ফলে একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি এই কম্পিউটারে কাজ করতে পারে। আদমশুমারি সংক্রান্ত তথ্য, বৃহৎ গবেষণা কর্ম,ব্যাংক, বিমা কোম্পানি ইত্যাদিতে এ জাতীয় কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে। IBM-360, IBM-3033, NCR-8000 ইত্যাদি মেইনফ্রেম কম্পিউটারের উদাহরণ।
(গ) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)ঃ গতি, আকার - আকৃতি এবং ধারণ ক্ষমতা মেইনফ্রেম কম্পিউটার থেকে কম ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারকে মিনি কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটারেও একসঙ্গে একাধিক লোক কাজ করতে পারে। হাসপাতাল, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক - বিমা ইত্যাদিতে মিনি কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়ে থাকে। IBM-32, IBM-AS400, NOVA-3 ইত্যাদি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ।
(ঘ) মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer) ঃ মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করে তৈরি কৃত কম্পিউটারকে মাইক্রো কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটার আকারে ছোট এবং দামে সস্তা। এ ধরনের কম্পিউটারে সাধারণত একজন ব্যক্তি কাজ করতে পারে। মাইক্রো কম্পিউটারকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। নিম্নে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
১। ডেস্কটপ কম্পিউটার (Desktop Computer):
ডেস্ক বা টেবিলের উপর রেখে মে সকল কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সেগুলোকে ডেস্কটপ কম্পিউটার বলে। এ কম্পিউটার কে পার্সোনাল কম্পিউটার ও বলা হয়। বাসাবাড়িতে অফিস ব্যবসায় ব্যাংক বিমা কোম্পানি ইত্যাদিতে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কম্পিউটার ব্যবহার কারী ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে।
২। ল্যাপটপ কম্পিউটার (Laptop Computer):
আকারে ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে ছোট, দেখতে ব্রিফকেস এর মতো কম্পিউটারকে ল্যাপটপ কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটার খুব সহজেই বহন করা যায়। এগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ডিসি বিদ্যুৎ অর্থাৎ ব্যটারিতে চলে। তাই মে কেউ বাসে ট্রেনে প্লেনে যেকোনো জায়গায় এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। এর মনিটর এলসিডি ডিসপ্লে ধরনের হয়।
৩। নোটবুক কম্পিউটার (Notebook Computer):
এ ধরনের কম্পিউটারের আকার -আকৃতি অনেকটা নোটবুকের মতো, এ জন্য এদেরকে নোটবুক কম্পিউটার বলে। এই কম্পিউটার গুলো সহজে বহনযোগ্য এবং নোটবুকের মতো হাতে রেখেই কাজ করা যায়।
৪। পকেট কম্পিউটার (Poket Computer):
এ ধরনের কম্পিউটার কে পকেটে নিয়ে চলাচল করা যায় বলে এদেরকে পকেট কম্পিউটার বলে। এটি দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের মতো, তবে তার চেয়ে বেশি কাজ করা যায়।
হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybride Computer) ঃ
অ্যানালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে মে কম্পিউটার তৈরি করা হয় তাকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে। এ ধরনের কম্পিউটার অ্যানালগ পদ্ধতিতে তথ্য গ্রহন করে এবং তা ডিজিতে রূপান্তরিত হয়ে প্রকৃয়াকরণ ও ফলাফল প্রকাশ করে। সাধারণত জটিল বৈঙ্গানিক সমস্যা সমাধানের জন্য এই কম্পিউটার বারবার করা হয়। পরমাণু শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র, মহাকাশযান, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শেষকথাঃ
প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অবশ্য়ই জেনে গেছেন কম্পিউটারের প্রকারভেদ সম্পর্কে। যা সম্পর্কে আপনার ধারনা ছিল না। তাই এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের মাঝে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
[আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে অন্যদের সচেতন করতে পারেন]
কীভাবে এই আর্টিকেলটি আরও উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে আপনার কোনো পরামর্শ থাকলে দয়া করে জানাবেন।
আপনি যদি আরও এই ধরনের গাইড, টিপস বা টিউটোরিয়াল পড়তে চান, তাহলে নিয়মিত চোখ রাখুন আমাদের সাইটে https://www.baneswarit.com/ এবং আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করুনঃ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url