যে ভিটামিনের অভাবে শরীর থাকে ক্লান্ত ও সারাদিন ঘুম পায় – বিস্তারিত জানুন
যে ভিটামিনের অভাবে শরীর থাকে ক্লান্ত এবং সারা দিন ঘুম পায় তা বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনারা যারা "যে ভিটামিনের অভাবে শরীর থাকে ক্লান্ত ও সারাদিন ঘুম পায়" এই সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, শরীর সবসময় ক্লান্ত লাগে বা সারাদিন ঘুম পায়? এর পেছনে ভিটামিন ঘাটতি বড় কারণ হতে পারে। কোন ভিটামিনের অভাবে এমনটা হয় এবং সমাধান কী – তা বিস্তারিত জেনে নিন।
চলুন এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, যে ভিটামিনের অভাবে শরীর থাকে ক্লান্ত ও সারাদিন ঘুম পায় সম্পর্কে বিস্তারিত।ভুমিকাঃ
আমাদের শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন। এর মধ্যে ভিটামিন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভিটামিনের ঘাটতির ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে কিছু ভিটামিনের অভাবে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি এবং সারাক্ষণ ঘুম ঘুম ভাব দেখা দেয়। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ তাড়াতাড়ি বুড়ো হতে না চাইলে, নিয়মিত যে ৮ টি খাবার খাবেন
১। ভিটামিন ডি (Vitamin D)
ভিটামিন ডি এর অভাব শরীরের ক্লান্তি এবং দুর্বলতার অন্যতম কারণ। এটি আমাদের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সচল রাখে।
অভাবের লক্ষণঃ
- সারাক্ষণ ক্লান্তি অনুভব করা।
- পেশিতে ব্যথা এবং দুর্বলতা।
- মনোযোগ কমে যাওয়া।
সমাধানঃ
- পর্যাপ্ত রোদে সময় কাটানো।
- ডিম, সামুদ্রিক মাছ (যেমন স্যামন, টুনা), এবং ফোর্টিফায়েড দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া।
২। ভিটামিন বি১২ (Vitamin B12)
ভিটামিন বি১২ রক্তকণিকার তৈরি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ঘাটতির ফলে ক্লান্তি এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
অভাবের লক্ষণঃ
- সারাক্ষণ ঘুম ঘুম লাগা।
- মাথা ঘোরা।
- হাত-পায়ের দুর্বলতা বা ঝিনঝিনে অনুভূতি।
সমাধানঃ
- মাংস, ডিম, দুধ, এবং পনির খাওয়া।
- প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ।
৩। ভিটামিন সি (Vitamin C)
ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এনার্জি লেভেল ঠিক রাখে। এর অভাবে দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দেখা দেয়।
অভাবের লক্ষণঃ
- ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া।
- সহজেই ঠান্ডা-জ্বর হওয়া।
- কাজের প্রতি উদ্যম কমে যাওয়া।
সমাধানঃ
- টক ফল (লেবু, কমলা, আমলকী), সবুজ শাকসবজি খাওয়া।
৪। ফোলেট (Folate) বা ভিটামিন বি৯
ফোলেট শরীরের কোষের বৃদ্ধি এবং ডিএনএ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এর অভাবে ক্লান্তি এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়।
অভাবের লক্ষণঃ
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
- মুখে ঘা বা জ্বালাপোড়া।
সমাধানঃ
- ডাল, পালংশাক, ব্রকলি, এবং আঙুরজাত খাবার খাওয়া।
আরো পড়ুনঃ মজবুত হাড় গঠনে সেরা ৫টি স্বাস্থ্যকর পানীয়
কেন ভিটামিনের অভাব হয়?
ভিটামিনের অভাবে শরীরে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং ঘুম বাড়ার মূল কারণ হলো শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ঠিকভাবে না পাওয়া। এর সারমর্মে বলতে গেলেঃ
- অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণঃ পর্যাপ্ত ফল, সবজি, দুধ, ডিম বা মাছ না খেলে শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি হয়।
- অসঠিক খাদ্যাভ্যাসঃ প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড বেশি খেলে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ঠিকমতো মেলে না।
- শরীরের শোষণ সমস্যাঃ হজমে সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক বা অন্ত্রের রোগের কারণে ভিটামিন শোষিত হয় না।
- জীবনধারা ও পরিবেশঃ অতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল, মানসিক চাপ বা সূর্যের আলো না পাওয়া (ভিটামিন D-এর জন্য) ভিটামিনের অভাব ঘটায়।
- শরীরের চাহিদা বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থা, বৃদ্ধ বয়স বা শারীরিক পরিশ্রমের সময় ভিটামিনের চাহিদা বেশি হয়, যা খাবার থেকে পুরোপুরি মিটে না।
সারসংক্ষেপঃ ভিটামিনের অভাব মূলত খাওয়া-পানার ঘাটতি, শরীরের শোষণ সমস্যা, বা চাহিদার অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে হয়।
কীভাবে সমস্যা সমাধান করবেন?
উপসংহারঃ
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, শরীরে ক্লান্তি এবং সারাক্ষণ ঘুম পেতে থাকলে এটি অবহেলা করবেন না। এটি ভিটামিনের অভাবের সংকেত হতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি এই সমস্যাগুলো এড়াতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।
[আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে অন্যদের সচেতন করতে পারেন]
কীভাবে এই আর্টিকেলটি আরও উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে আপনার কোনো পরামর্শ থাকলে দয়া করে জানান।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url