কতটুকু সম্পদ থাকলে কোরবানি করা ফরজ হয়? স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা
কতটুকু সম্পদ থাকলে কোরবানি করা ওয়াজিব হয়? স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা।
আপনারা যারা "কতটুকু সম্পদ থাকলে কোরবানি করা ওয়াজিব হয়? স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ব্যাখ্যা।" এই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, স্মার্টফোন থাকলে কি কোরবানি ওয়াজিব হয়? আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন, কতটুকু সম্পদ থাকলে কোরবানি দিতে হয়, ইসলামী দৃষ্টিকোণ ও বাস্তব উদাহরণসহ।
চলুন আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, কোরবানির ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ (ইসলামী দৃষ্টিকোণ) সম্পর্কে বিস্তারিত গাইডলাইন ।
ভূমিকা: স্মার্টফোনে কোরবানি নিয়ে গুগলে সার্চ করছেন?
রাজশাহীর একটা দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম, পাশের টেবিলে এক ভাই ফোনে কারো সাথে বলছিলেন—"ভাই, আমার তো একটা স্মার্টফোন আছে, তাইলে কি আমার কোরবানি ফরজ হইছে?"
এই প্রশ্নটা শুনেই মাথায় বাজ পড়ার মতো লাগল। সত্যি বলতে, এটা শুধু ওই ভাই না—আমাদের অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে।
তাই আজকে আমরা খুব সহজ করে জানবো—আসলে কতটুকু সম্পদ থাকলে কোরবানি ফরজ হয়? স্মার্টফোন থাকলে কি তা ধরা হবে সম্পদ হিসেবে? চলুন জেনে নিই ইসলামী দৃষ্টিতে এবং বাস্তব উদাহরণসহ।
আরো পড়ুনঃ মধ্যবিত্তকে গোপনে নিঃস্ব করে ফেলা কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস – জেনে নিন আজই!
কোরবানির ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ (ইসলামী দৃষ্টিকোণ)
১। মুসলিম হতে হবে
কোরবানি শুধু মুসলমানদের ওপরই ওয়াজিব।
২। সাবালক ও মুক্ত হতে হবে
অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বাধীন (দাস না হওয়া) ব্যক্তি হতে হবে।
৩। নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে
এটাই আজকের মূল আলোচনার বিষয়।
নেসাব পরিমাণ সম্পদ মানে কী?
নেসাব শব্দটা ইসলামি পরিভাষা, যার অর্থ এমন পরিমাণ সম্পদ, যেটা কারো যদি থাকে, তাহলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
নেসাব নির্ধারণ হয় সোনা বা রুপার মূল্যের ভিত্তিতেঃ
- ৭.৫ ভরি (৬১২.৩৬ গ্রাম) সোনাঅথবা
- ৫২.৫ ভরি (৪৩৬.৩৭ গ্রাম) রূপা
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, অধিকাংশ আলেম রূপার মূল্যের ভিত্তিতেই নেসাব নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন।
সোজা করে বললে, যার নিকট কোরবানির ঈদের দিন (১০-১২ জিলহজ্জ) সকাল বেলায় তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রায় ৬৫ হাজার টাকার সমপরিমাণ সম্পদ থাকবে, তার উপর কোরবানি ওয়াজিব।
স্মার্টফোন কি এই সম্পদের মধ্যে পড়ে?
এখানেই আসে অনেকের প্রশ্ন। আমি যদি একটা ২০-৩০ হাজার টাকার ফোন ব্যবহার করি, তাহলে কি এটা নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে?
তবে যদি আপনার কাছে অতিরিক্ত ফোন থাকে, যেটা বিক্রি করলে ১০-১৫ হাজার পাওয়া যায়, এবং অন্যান্য নগদ টাকাসহ নেসাব অতিক্রম করে-তাহলে সেটা হিসাব হবে।
আসুন একটি উদাহরণ দেখিঃ
স্মার্টফোন তার প্রয়োজনীয় ব্যবহারের জন্য, তাই হিসাবের বাইরে।
সিদ্ধান্তঃ কাওসারের উপর কোরবানি ওয়াজিব।
মেয়েদের ক্ষেত্রে কোরবানি ওয়াজিব কি না?
কোরবানির টাকা ধার করে বা কিস্তিতে গরু কেনা যাবে কি?
তবে ইসলাম সহজ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, তাই অযথা চাপ নেয়ার দরকার নেই।
সংক্ষিপ্ত উপসংহারঃ
- কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য প্রায় ৬৫ হাজার টাকার অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হয়।
- স্মার্টফোন যদি আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনের জন্য হয়, তাহলে তা এই হিসাবের বাইরে।
- কিন্তু অতিরিক্ত ফোন, স্বর্ণ, নগদ টাকা, জমি (যদি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে হয়)-সব হিসাবের মধ্যে পড়ে।
- মেয়েদের গহনার দাম ধরলে অনেক সময় কোরবানি ওয়াজিব হয়।
শেষ কথা | দ্বীন বুঝে চলুন, আলেমের পরামর্শ নিন
ইসলামের বিধানগুলো গভীর কিন্তু সহজবোধ্য। শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতা আর সঠিক দিকনির্দেশনা। তাই যখন মনে প্রশ্ন আসে—"আমার স্মার্টফোন আছে, তাহলে কি কোরবানি ফরজ?" তখন উত্তরের জন্য ফেসবুক পোস্ট না দেখে প্রকৃত আলেমের কাছে যান।
আর হ্যাঁ, বানেশ্বর আই টি থেকে যেহেতু পড়ছেন, তাহলে আপনি জানেন-আমরা সঠিক তথ্য দিই, ভয় দেখাই না।
পাঠকদের প্রতি অনুরোধঃ
এই লেখা যদি উপকারে আসে, আপনার বন্ধুদের সাথেও শেয়ার করুন। আর কমেন্টে লিখুন—আপনি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তো, কোরবানির যোগ্য কিনা বুঝলেন?
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url