চার বছরের নীচে শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ কেন তা বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনারা যারা "চার বছরের নীচে শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ কেন" এই বিষয়ে জানতে চান। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ৪ ধরনের কাফ সিরাপ নিষিদ্ধ কেন। কেনোইবা এই সিদ্ধান্ত? কোন কোন সিরাপগুলো নিষিদ্ধ? বিস্তারিত জানুন এই প্রতিবেদনে। হারবিধি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে।
চলুন চার বছরের নীচে শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ কেন তা বিস্তারিত জেনে নিন।
ভূমিকাঃ চার বছরের নীচে শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ।
সম্প্রতি ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিশুস্বাস্থ্য রক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এখন থেকে চার বছরের নীচে বয়সী শিশুদের জন্য ৪ ধরনের কাশির সিরাপ (Cough Syrup) ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো ছোট শিশুদের অনাকাঙ্ক্ষিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধ করা।
আরো পড়ুনঃ শিশুকে শাস্তি নয় বরং ১০টি কৌশলে তাকে শৃঙ্খল হতে শেখান।
কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো?
কোন ৪ ধরনের কাফ সিরাপ নিষিদ্ধ হলো?
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ড্রাগ কন্ট্রোল অথরিটি যে চারটি সিরাপের ব্যবহার বন্ধের সুপারিশ করেছে, সেগুলি হলো:
-
কোডিনযুক্ত কাফ সিরাপ (Codeine-Based Cough Syrup)কোডিন একটি মৃদু আফিমজাতীয় উপাদান যা শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
-
ডেক্সট্রোমেথরফ্যানযুক্ত কাফ সিরাপ (Dextromethorphan Syrup)অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণে শিশুদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলতে পারে।
-
ফার্স্ট জেনারেশন অ্যান্টিহিস্টামিনযুক্ত কাফ সিরাপ (First-Generation Antihistamine Syrup)যেমন: ক্লোরফেনিরামিন, যা শিশুদের ঘুমের সমস্যা ও স্নায়ু দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে।
-
কম্বিনেশন কাফ সিরাপ (Combination Cough Syrups)যেমন: একসাথে কফ suppressant ও expectorant ব্যবহার করা সিরাপ, যা শিশুর জন্য জটিলতা বাড়ায়।
চিকিৎসকদের মতামত কী?
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন,
- ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে কাশি একটি স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
- কাশি দমন করলে অনেক সময় শরীরে জমে থাকা মিউকাস (শ্লেষ্মা) বের হতে বাধা পায়, ফলে ফুসফুসে সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
- বরং শিশুদের হালকা গরম পানি, বাষ্প নেওয়া বা ঘরোয়া উপায়ে স্বস্তি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ডাঃ অরুণিতা সেনগুপ্ত, (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ) বলেন,
"চার বছরের নিচে শিশুদের জন্য কোনো কেমিক্যাল সিরাপ এড়িয়ে চলাই নিরাপদ। প্রয়োজন হলে শুধু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।"
কী করবেন যদি শিশুর কাশি হয়?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেওয়া কয়েকটি নিরাপদ পদক্ষেপ:
- বাষ্প নিন: হালকা গরম পানির বাষ্প শ্বাসের মাধ্যমে শিশুকে দিতে পারেন।
- গরম পানি বা গরম স্যুপ: শিশুর গলা শান্ত করতে সহায়তা করে।
- মধু (১ বছরের বেশি বয়সে): প্রাকৃতিক কাশি কমাতে সাহায্য করে। (১ বছরের কম বয়সে মধু একেবারেই নয়!)
- শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখুন: পর্যাপ্ত তরল খাওয়ান।
- শিশুকে বিশ্রাম দিন: পর্যাপ্ত ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
উপসংহার
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন চার বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি বড় এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ। শিশুদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনও ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়। তাই অভিভাবকদের উচিত শিশু অসুস্থ হলে নিজে থেকে ওষুধ না দিয়ে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। স্বাভাবিক কাশি হলে প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করাই শ্রেয়।
যাইহোক যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তবে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
0 Comments