হিজরি সন গণনা শুরু হয় যেভাবে ! ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

হিজরি সন গণনা শুরু হয় যেভাবে ! ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

ভূমিকাঃ

ইসলামী ক্যালেন্ডার বা হিজরি সন হলো চাঁদের উপর ভিত্তি করে তৈরি একটি চান্দ্র ক্যালেন্ডার, যা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ইবাদতের সময় নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, হিজরি সন গণনার শুরু ঠিক কবে এবং কীভাবে হয়েছে। এই আর্টিকেলে আমরা হিজরি সনের ইতিহাস, প্রেক্ষাপট, এবং গণনা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

হিজরি সন গণনা শুরু হয় যেভাবে


হিজরি সনের সূচনাঃ

হিজরি সনের সূচনা হয় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের (স্থানান্তরের) ঘটনার উপর ভিত্তি করে। যদিও হিজরত সংঘটিত হয়েছিল ৬২২ খ্রিস্টাব্দে, তবে তখনই হিজরি সনের ব্যবহার শুরু হয়নি।

উমর (রা.)-এর সময় হিজরি সনের প্রবর্তনঃ

হিজরি সনের আনুষ্ঠানিক গণনা শুরু হয় খলিফা হযরত উমর (রা.)-এর শাসনামলে, খ্রিস্টীয় ৬৩৮ সালে। সাহাবিদের পরামর্শ অনুযায়ী হিজরতের বছরকে ইসলামী ক্যালেন্ডারের প্রথম বছর হিসেবে নির্ধারণ করা হয় এবং মহররম মাসকে প্রথম মাস হিসেবে গ্রহণ করা হয়।


হিজরি সনের বিশেষ বৈশিষ্ট্যঃ

১। চান্দ্র পদ্ধতি অনুসরণঃ হিজরি সন চাঁদের আবর্তনের উপর ভিত্তি করে, ফলে প্রতিটি মাস ২৯ বা ৩০ দিনে সীমাবদ্ধ থাকে।

২। ১২ মাস বিশিষ্টঃ এই ক্যালেন্ডারে মোট ১২টি মাস রয়েছে, যেমন—মহররম, সফর, রবিউল আউয়াল, রবিউস সানি, জমাদিউল আউয়াল, জমাদিউস সানি, রজব, শাবান, রমজান, শাওয়াল, জুলক্বদ ও জুলহিজ্জা।

৩। ধর্মীয় গুরুত্বঃ ইসলামের প্রধান ইবাদত যেমন রমজান, হজ, আশুরা ইত্যাদি হিজরি সনের ভিত্তিতে পালন করা হয়।

হিজরি সনের গণনার ধরনঃ

হিজরি সন শুরু হয় নতুন চাঁদ দেখা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। এক মাসের শেষে যদি নতুন চাঁদ দেখা যায়, তবে পরবর্তী মাস শুরু হয়। এটি অনেক সময় ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। কিছু দেশ চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে, আবার কিছু দেশ বিজ্ঞানভিত্তিক হিসেবও গ্রহণ করে।


উপসংহারঃ 

হিজরি সনের ইতিহাস মুসলমানদের জন্য একটি গর্বের অংশ। এটি শুধু একটি ক্যালেন্ডার নয়, বরং মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় চেতনার প্রতীক। এই সনের মাধ্যমে আমরা আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, রোজা, ঈদ, হজ ইত্যাদি পালন করে থাকি।


Post a Comment

0 Comments