ইতিহাসে মাত্র একবারই এসেছিল ‘৩০ ফেব্রুয়ারি’ বিস্তারিত জেনে নিন।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারণত ২৮ দিন থাকে, এবং লিপ ইয়ারে ২৯ দিন। কিন্তু ইতিহাসে মাত্র একবারই ৩০ ফেব্রুয়ারি দেখা গিয়েছিল। এটি ঘটেছিল ১৭১২ সালে সুইডেনে (যা তখন ফিনল্যান্ডও অন্তর্ভুক্ত ছিল)।
পটভূমিঃ
১৭০০ সালের দিকে সুইডেন জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করত, কিন্তু ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে স্থানান্তরিত হচ্ছিল। জুলিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের চেয়ে ১১ দিন পিছিয়ে ছিল। এই ব্যবধান দূর করতে সুইডেন ১৭০০ সালে একটি সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ধীরে ধীরে লিপ ইয়ার বাদ দিয়ে ৪০ বছরের মধ্যে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে মিলিয়ে নেওয়া।
সমস্যাঃ
১৭০০ সালে সুইডেন প্রথম লিপ ইয়ার বাদ দেয়, কিন্তু পরবর্তীতে গ্রেট নর্দার্ন ওয়ার (১৭০০-১৭২১) এবং অন্যান্য রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তারা এই সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারেনি। ফলে, ১৭০৪ এবং ১৭০৮ সালে তারা আবার লিপ ইয়ার পালন করে। এই ভুলের কারণে সুইডেনের ক্যালেন্ডার জুলিয়ান এবং গ্রেগরিয়ান উভয় ক্যালেন্ডার থেকে আলাদা হয়ে যায়।
৩০ ফেব্রুয়ারির সৃষ্টিঃ
এই বিশৃঙ্খলা দূর করতে সুইডেন ১৭১২ সালে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে ফিরে যায়। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে তারা ফেব্রুয়ারি মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে, এবং সেই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০ দিন ছিল। এইভাবে, ১৭১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০ তারিখ দেখা যায়, যা ইতিহাসে একমাত্র ঘটনা।
পরবর্তী পদক্ষেপঃ
১৭৫৩ সালে সুইডেন অবশেষে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে। এই পরিবর্তনের সময় তারা ১১ দিন বাদ দেয়, অর্থাৎ ১৭৫৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ তারিখের পরের দিনটি ১ মার্চ হিসেবে গণনা করা হয়।
উপসংহারঃ
৩০ ফেব্রুয়ারি একটি অনন্য ঐতিহাসিক ঘটনা, যা শুধুমাত্র ১৭১২ সালে সুইডেনে ঘটেছিল। এটি ক্যালেন্ডার সংস্কারের একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ, যা সময়ের হিসাব নিয়ে মানুষের সংগ্রাম এবং ভুলের ইতিহাসকে তুলে ধরে।
0 Comments