শরীরে রোগের লক্ষণগুলি যত সহজে সনাক্ত করা যায়, মানসিক রোগ তত বেশি লুকিয়ে থাকে। জীবন ও সুস্থতার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপমুক্ত ও রোগমুক্ত সুখী জীবনের জন্য ভালো মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার বিকল্প নেই।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি জিনগত হতে পারে। এছাড়াও, জীবনে চাপ, ঘুমের অভাব, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত আলো এবং যত্নের অভাবও মানসিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে, একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ভারতের হরিয়ানার একটি দাতব্য সংস্থা মনস্থালির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জ্যোতি কাপুর হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন যে প্রতিদিন অন্তত নিচের অভ্যাসগুলো অনুসরণ করতে হবে।
সূচীপত্রঃ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়।
ভূমিকাঃমানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়।
প্রিয় পাঠক গণ আপনারা যারা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে চান আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য । আমরা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে শুনে থাকি । আজকে এই আর্টিকেলে সেই রকমই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব । তো চলুন বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নেওয়া যাক কি কি উপায়ে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়।
শারীরিক ব্যায়াম করাঃ
যেহেতু অনেকেই শারীরিক ব্যায়ামকে বিশেষ গুরুত্ব দেন, তাই ভাল মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ব্যায়ামের মতো কিছু নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তোলাও প্রয়োজন। হাঁটা, যোগব্যায়াম বা অন্য যে কোনও ধরনের শারীরিক ক্রিয়াকলাপই হোক না কেন, আপনার পছন্দ অনুযায়ী ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম এন্ডোরফিন, হরমোন প্রকাশ করে যা শারীরিক এবং মানসিক ব্যথা হ্রাস করে। এটি মনকে শান্ত করে।
ঘুমানোর অভ্যাসঃ
প্রতিদিন রাতে অন্তত ৬/৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত মানসিক ও শারীরিক চাপ পড়ে, তাই বিশ্রাম করা জরুরি। আর সে জন্যই এই অভ্যাসটা করুন, এতে আপনার মস্তিস্ক সুস্থ থাকবে এবং শারীরিক ভাবেও সুস্থ থাকবেন ।
সঙ্গ দেওয়াঃ
বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অথবা আত্তীয় সজনদের সঙ্গে নিয়ম তান্ত্রিক ভাবে সময় দিতে পারেন । বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটালে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ইহাতে সামাজিক যোগাযোগও বৃদ্ধি পায়।
সীমিত স্ক্রিন সময়ঃ
সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি কতটা সময় ব্যয় করবেন তা আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খবর দেখুন, খবর শুনুন এবং খবর পড়ুন অথবা সিনেমা দেখুন। অতিরিক্ত নেতিবাচক তথ্য মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাভাবিক সময় ব্যয় করতে হবে ।
নিজেকে ধন্যবাদঃ
নোটবুক লেখার প্রক্রিয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা । প্রতিদিন অন্তত তিনটি জিনিস লিখে রাখুন যার জন্য আপনি নিজে কৃতজ্ঞতা বোধ করেন । এটি আপনাকে ইতিবাচক চিন্তাভাবনার দিকে ধাবিত করবে।
নতুন কিছু শেখাঃ
প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন, সেটা হতে পারে গল্প, কবিতা, গাণ বা যে কোন ধরনের কাজ ইত্যাদি। আপনি নতুন কিছু শিখবেন এবং সেদিকে মনোনিবেশ করবেন। এটি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে এবং আপনার মস্তিষ্কের শক্তি বাড়িয়ে তুলবে।
রুটিন মেনে চলাঃ
কাজ করুন, বিশ্রাম করুন, নিজের যত্ন নিন, সবকিছুরই একটি রুটিন অনুসরণ করা ভাল। এর মাধ্যমে আপনি প্রতিদিনের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাবেন এবং আপনার জীবনে মানসিক সস্তি ফিরে পাবেন। মনে রাখবেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করা মানসিক অশান্তির একটা বড় কারন হতে পারে।
আত্মপ্রকাশ করাঃ
লেখালেখি, অঙ্কন বা গান-বাজনা, গল্প করা যাই হোক না কেন, আপনাকে আপনার আবেগ প্রকাশ করতে হবে। আবেগ প্রকাশ মানুষের মনটা কিছুটা হলেও হালকা হয়, আর এই অনুশীলনগুলো চিকিৎসার একটি রূপ হিসাবে কাজ করে।
ধ্যান করাঃ
প্রতিদিন কয়েক মিনিট ধ্যান করা উচিৎ । এই অনুশীলন নিজেকে নমনীয় রাখবে, মানসিক চাপ কমাবে এবং আত্ম-সচেতনতার অনুভূতি বাড়িয়ে তুলবে। ইহাতে দিন দিন মানসিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং মনের অবস্থাও ভলো হতে থাকবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিনঃ
আপনি যদি অসুস্থ বোধ করেন, তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে দ্বিধা করবেন না। কাউন্সেলিং এবং থেরাপি খুবই সহায়ক। আপনার যদি জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয় তবে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা খুব জরুরী।
0 Comments