কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা অপরিসীম। আজকে আমি আলোচনা করব কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা সম্পর্কে। কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা ছাড়া ও আপনি আরো জানতে পারবেন ক্রোমোজোমের কাজ, ক্রোমোজোম কোথায় থাকে, ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন।
পেজ কনটেন্ট সূচিপত্র: কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা
- ক্রোমোজোম কাকে বলে এবং ক্রোমোজোম কোথায় থাকে
- ক্রোমোজোমের কাজ
- কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা
- ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন
- শেষ কথা
ক্রোমোজোম কাকে বলে এবং ক্রোমোজোম কোথায় থাকে
কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমরা জানবো ক্রোমোজোম কাকে বলে এবং ক্রোমোজোম কোথায় থাকে। শুরুতেই জানবো ক্রোমোজোম কাকে বলে এবং পরবর্তীতে আমরা জানবো ক্রোমোজোম কোথায় থাকে। ক্রোমোজোম কোথায় থাকে তা জানতে একটু অপেক্ষা করুন।
যে সকল কোষে নিউক্লিয়াস আছে সে সকল কোষের প্যাঁচানো সুতার মতো অংশকে ক্রোমোজোম বলে। স্ট্রাচবার্জার ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম নিউক্লিয়াসের ভিতরে প্যাচানো সুতার মতো এই অংশটি দেখতে পান। নিউক্লিয়াসের ভিতরে এই ক্রোমোজোম পাওয়া যায়।
এছাড়াও কিছু ক্রোমোজোম সাইটোপ্লাজম এর ভিতরে থাকে। তাহলে ক্রোমোজোম কোথায় থাকে এর উত্তর হবে ক্রোমোজোম নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম এর ভিতরে থাকে। ক্রোমোজোম কোথায় থাকে আশাকরি তা বুঝতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন: ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধির দোয়া - ধৈর্য ধারণ করার দোয়া আরবি
একটি কোষের ২ টি থেকে ১৬০০টি পর্যন্ত ক্রোমোজোম থাকতে পারে। প্রতিটি ক্রোমোজোম দুটি ক্রোমাটিড দ্বারা গঠিত যেগুলো সেন্ট্রোমিয়ারের সাথে যুক্ত।
একটি ক্রোমোজোম দৈর্ঘ্যে ৩.৫ থেকে ৩০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা সব সময় ধ্রুবক থাকে। জনন কোষে হ্যাপ্লয়েড সেট(n), দেহকোষে ডিপ্লয়েড সেট(2n) এবং সস্য নিউক্লিয়াসে (3n) সংখ্যক থাকে। মানবদেহে ক্রোমোজোম সংখ্যা ২৩ জোড়া। বিভিন্ন জীবের ক্ষেত্রে ক্রোমোজোম সংখ্যা বিভিন্ন রকমের।
ক্রোমোজোম কে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো: অটোজোম বা দেহ গঠনকারী ক্রোমোজোম এবং অন্যটি হলো সেক্স ক্রোমোজোম বা অ্যালোজোম। যেগুলো জীব দেহের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলোকে বলা হয় অটোজোম। আর যে ক্রোমোজোম গুলো জীবের লিঙ্গ নির্ধারণ করে সেগুলো কে বলা হয় সেক্স ক্রোমোজোম।
ক্রোমোজোম প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা তৈরি। নিউক্লিক এসিড আবার ২ ধরনের। এগুলো হলো ডি এন এ এবং আর এন এ। ক্রোমোজোমের মধ্যে ডিএনএ থাকে শতকরা ৪৫ ভাগ। এবং নিউ ক্লিক এসিড থাকে শতকরা ০.২ থেকে ১.৪ ভাগ।
প্রোটিন ও ২ ধরনের। এগুলো হলো নিম্ন আণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন প্রোটিন এবং উচ্চ আণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন প্রোটিন। প্রোটিনের মধ্যে শতকরা ৪৫ ভাগ হলো নিম্ন আণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন প্রোটিন। শতকরা ১০ ভাগ বাড়িতে গিয়েও কম থাকে উচ্চ আনবিক গুরুত্বসম্পন্ন প্রোটিন।
কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা এবং ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন ও ক্রোমোজোমের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। এরপর আমরা জানবো ক্রোমোজোমের কাজ সম্পর্কে।
ক্রোমোজোমের কাজ
বন্ধুরা তোমরা অনেকেই আছো যারা গুগলে ক্রোমোজোমের কাজ খুঁজছো। মানবদেহে ক্রোমোজোমের কাজ এর গুরুত্ব অপরিসীম। চলো তাহলে দেখে নেই ক্রোমোজোমের কাজ গুলো কী। ক্রোমোজোমের কাজ:
- ক্রোমোজোম বংশগতির বাহক ও ধারক। তাই বংশপরম্পরায় বংশের বৈশিষ্ট্য ধারণ করা ক্রোমোজোমের কাজ
- ক্রোমোজোমের মাধ্যমে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা নির্ধারণ করা ক্রোমোজোমের কাজ
- ক্রোমোজোমের RNA প্রোটিন সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- ক্রোমোজোমের DNA মানুষের চুলের প্রকৃতির, চোখের রং, চামড়ার রং ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা ক্রোমোজোমের কাজ
- মানুষের মতো অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য গুলো তার ক্রোমোজোমের অবস্থিত জিন নিয়ন্ত্রণ করা ক্রোমোজোমের কাজ
আরো পড়ুন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
আশাকরি ক্রোমোজোম কোথায় থাকে এবং ক্রোমোজোমের কাজ কী তা জানতে পেরেছেন। ক্রোমোজোম কোথায় থাকে তা আমি পূর্বেই বলেছি। ক্রোমোজোম কোথায় থাকে জানতে উপরের দিকে দেখুন।
কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা
এখন আমি বলবো কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা। প্রায় ই দেখা যায় পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে যে কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর। কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থী রাই জানেনা। কোষ বিভাজনের ক্রোমোজোমের ভূমিকা খুব ই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। চলো তাহলে দেখে নেই কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা কী। কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা:
একটি কোষ বিভাজিত হয়ে দুইটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে। পিতার শুক্রাণু এবং মায়ের ডিম্বানু মিলিত হয়ে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে জাইগোট তৈরি হয়। এই শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সাথে পিতা মাতার ক্রোমোজোম আসে। পিতার যদি X ক্রোমোজোম আসে এবং মায়ের যদি Y ক্রোমোজোম আসে তাহলে পুত্র (XY) সন্তান জন্ম হবে। আর পিতার যদি X ক্রোমোজোম আসে এবং মায়ের ও যদি X ক্রোমোজোম আসে তাহলে মেয়ে (XX) সন্তান জন্ম হবে।
আরো পড়ুন: ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধির দোয়া - ধৈর্য ধারণ করার দোয়া আরবি
উৎপন্ন জাইগোট থেকে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবদেহ গঠিত হয়। পিতা মাতা থেকে আগত ক্রোমোজোম বংশগতির বাহক হিসেবে কাজ করে। এই ক্রোমোজোমের কাজ সম্পর্কে পূর্বেই আলোচনা করেছি। ক্রোমোজোমের কাজ জানতে উপরের দিকে দেখুন। এর পর জানতে পারবেন ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন।
ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন
শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রশ্নের খ কিংবা ঘ নং এ প্রায় ই একটি প্রশ্ন আসে এটি হলো ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন। ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন প্রশ্নটির উত্তর অনেক সময় বইয়ে কঠিন ভাষায় লেখা থাকে। এখন আমি সহজ ভাষায় বলবো ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন। যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই বুঝতে পারেন ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন।
ক্রোমোজোম কোথায় থাকে তা আপনাকে পূর্বেই বলেছি এখন আমি আমারা জানবো বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন। জীবের এক একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একেকটি জিন কাজ করে থাকে। আবার একটি জিন কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যেমন মানুষের চুলের রং, দেহে রং ইত্যাদি। জীবের বৈশিষ্ট্য গুলো তাদের ক্রোমোজোম এ অবস্থিত জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ক্রোমোজোম জিনকে এক বংশ থেকে পরবর্তী বংশের বহন করে বংশগতির ধারা অব্যাহত রাখে।
কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোম জিনকে সরাসরি মাতা পিতা থেকে বহন করে পরবর্তী বংশধারে নিয়ে যায়। আর এজন্যই ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয়। ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন আশাকরি তা বুঝতে পেরেছেন। গুগলে এসে ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন তা লিখে সার্চ দিলে ই আমাদের এই পোস্টটি পেয়ে যাবেন।
শেষ কথা: কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা
আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় ছিল কোষ বিভাজনে ক্রোমোজোমের ভূমিকা। আশাকরি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। এবং ক্রোমোজোম কোথায় থাকে, ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন তা বুঝতে পেরেছেন। এছাড়াও এই আর্টিকেলে আপনাকে আরো বলা হয়েছে ক্রোমোজোমের কাজ, ক্রোমোজোম কোথায় থাকে, ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন প্রভৃতি সম্পর্কে।
পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ফলে ক্রোমোজোম কোথায় থাকে এবং ক্রোমোজোম কে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয় কেন তা তারাও জানতে পারবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই। ২২০৭০
0 Comments