ইমেইল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করার সেরা ৫টি উপায় (২০২৫) বিস্তারিত গাইড
ইমেইল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করার সেরা ৫টি উপায় (২০২৫) বিস্তারিত গাইড
আপনারা যারা "ইমেইল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করার সেরা ৫টি উপায় (২০২৫)" সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন, ইমেইল মার্কেটিং আসলে কী এবং এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে ইমেইল ব্যবহার করে অনলাইনে আয় করা যায়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ইনকামের কৌশল, নিজের ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করার কার্যকর উপায়, ফ্রিল্যান্স সার্ভিস প্রমোশন করে ক্লায়েন্ট পাওয়ার টিপস, পেইড ও স্পন্সরযুক্ত নিউজলেটার চালিয়ে আয়ের সুযোগ, ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়িয়ে Google AdSense থেকে আয় ও সফল ইমেইল মার্কেটিংয়ের টিপস ও বাস্তব পরামর্শ সম্পর্কে বিস্তারিত।
চলুন আর দেরি না করে আজকের আর্টিকেলে আমরা জেনে নেই, ইমেইল মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করার সেরা ৫টি উপায় (২০২৫) সম্পর্কে।
ভূমিকাঃ
বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইনে আয় করার নানা রকম পথের মধ্যে ইমেইল মার্কেটিং একটি পরীক্ষিত, কার্যকর ও টেকসই পদ্ধতি। অনেকেই মনে করেন, ইমেইল এখন পুরনো প্রযুক্তি। কিন্তু বাস্তবতা হলো-এখনো ইমেইল হলো সবচেয়ে ব্যক্তিগত ও সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম, যার ওপেন রেট সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে অনেক বেশি।
বিশেষ করে যারা অনলাইনে বিজনেস, ফ্রিল্যান্সিং, ব্লগিং কিংবা কোর্স বিক্রির মাধ্যমে আয় করতে চান, তাদের জন্য ইমেইল মার্কেটিং হতে পারে শক্তিশালী অস্ত্র। কারণ, আপনি সরাসরি আগ্রহী সাবস্ক্রাইবারদের ইনবক্সে পৌঁছাতে পারেন-যা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে এবং বিক্রির সুযোগ বাড়ায়।
এই আর্টিকেলে আমরা জানব, কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং ব্যবহার করে আপনি অনলাইনে আয় করতে পারেন। বিস্তারিত আলোচনা করব সেরা ৫টি উপায় নিয়ে-যা একজন নতুন বা অভিজ্ঞ ব্যক্তি দুইজনের জন্যই প্রযোজ্য। প্রতিটি উপায় ব্যাখ্যা করব সহজ ভাষায়, বাস্তব উদাহরণ ও করণীয়সহ।
চলুন তাহলে শুরু করি, ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে আপনার আয়ের পথ খুলে দেয়ার গাইডটি সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে আয় করার তিনটি উপায় – আয় শুরু করুন নিজের ঘরে থেকেই।
ইমেইল মার্কেটিং কী?
ইমেইল মার্কেটিং হলো একটি অনলাইন মার্কেটিং কৌশল, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য, সার্ভিস বা তথ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়। এটি সরাসরি কাস্টমারের ইনবক্সে বার্তা পাঠিয়ে সম্পর্ক তৈরি ও বিক্রি বাড়ানোর একটি কার্যকর মাধ্যম।
ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য হলো-সঠিক সময়ে, সঠিক বার্তা দিয়ে একজন সম্ভাব্য গ্রাহককে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করা। এর মাধ্যমে আপনি পণ্যের প্রচার, ডিসকাউন্ট অফার, নতুন ব্লগ পোস্ট, বা অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক পাঠাতে পারেন।
একজন ইমেইল মার্কেটার সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ইমেইল লিস্ট তৈরি করে, যেখানে আগ্রহী ব্যবহারকারীরা নিজেদের ইচ্ছায় সাবস্ক্রাইব করে। এরপর নিয়মিত বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে (অটোমেশন টুলের মাধ্যমে) ইমেইল পাঠানো হয়।
ইমেইল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো-এটি কম খরচে, উচ্চ রিটার্ন দেয় এবং একটি নির্ভরযোগ্য ও ব্যক্তিগত মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
বিশ্বজুড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্লগার, ফ্রিল্যান্সার এবং অনলাইন উদ্যোক্তারা ইমেইল মার্কেটিং ব্যবহার করে মাসে হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন।
এই সব ইমেইল মার্কেটিং এর মধ্যে সেরা পাঁচটি মাধ্যম নিয়ে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১। Affiliate Marketing করে আয়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি অনলাইন আয়ের পদ্ধতি, যেখানে আপনি অন্যের পণ্য বা সার্ভিস প্রমোট করে প্রতিবার বিক্রিতে কমিশন পান। এজন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট অ্যাফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয়। যখন কেউ সেই লিংকের মাধ্যমে পণ্য কেনে, আপনি একটি নির্দিষ্ট শতাংশ অর্থ আয় করেন।
এই আয় করার পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ বিনিয়োগ ছাড়া শুরু করা যায় এবং এটি ঘরে বসেই করা সম্ভব। ইমেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া বা নিজের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক প্রচার করতে পারেন। সফল হতে হলে অবশ্যই বিশ্বস্ত পণ্য নির্বাচন, মানসম্মত রিভিউ, ও সঠিক টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে প্রমোশন করতে হবে।
সঠিক কৌশলে কাজ করলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে মাসে হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কার্যকর প্যাসিভ ইনকাম সোর্সগুলোর একটি।
কীভাবে কাজ করেঃ
-
আপনি কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের জন্য অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক ব্যবহার করেন।
-
সেই লিঙ্কটি ইমেইল সাবস্ক্রাইবারদের কাছে পাঠান।
-
কেউ যদি আপনার পাঠানো লিঙ্কের মাধ্যমে কিনে, তাহলে আপনি কমিশন পান।
করণীয়ঃ
-
সঠিক টার্গেট অডিয়েন্স নির্বাচন করুন।
-
যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করবেন, তা আগে যাচাই করুন।
-
ব্যক্তিগত রিভিউ বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করে পাঠান।
উদাহরণঃ
“আপনি যদি ট্রাভেল সম্পর্কিত নিউজলেটার পাঠান, তাহলে ট্রাভেল গ্যাজেট বা ট্যুর বুকিং অ্যাফিলিয়েট শেয়ার করতে পারেন।”
২। নিজের ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে আয়
আপনি কী বিক্রি করতে পারেনঃ
-
ইবুক
-
কোর্স (Udemy বা নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে)
-
ডিজিটাল টেমপ্লেট, ওয়েবসাইট থিম
করণীয়ঃ
-
সাবস্ক্রাইবারদের আগ্রহ বুঝে পণ্য তৈরি করুন।
-
ফ্রি রিসোর্স দিয়ে শুরু করে ট্রাস্ট তৈরি করুন।
-
এরপর প্রিমিয়াম কনটেন্ট অফার করুন।
উদাহরণঃ
“আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইনার হন, তাহলে ১০০টি লোগো টেমপ্লেটের প্যাকেজ তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। কেবল ইমেইলের মাধ্যমেই বিক্রি সম্ভব।”
৩। নিউজলেটার সাবস্ক্রিপশন থেকে আয়
নিউজলেটার সাবস্ক্রিপশন থেকে আয় একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক পদ্ধতি। এখানে মূলত আপনি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত ইমেইল পাঠান, যেমন প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। পাঠকরা যদি আপনার কনটেন্টকে উপকারি মনে করেন, তাহলে তারা নিয়মিত পড়তে আগ্রহী হয় এবং আপনাকে ফলো করেন।
এই প্রক্রিয়ায় আপনি আয় করতে পারেন তিনটি প্রধান উপায়েঃ
স্পন্সরশিপঃ বড় ব্র্যান্ড বা কোম্পানি আপনাকে অর্থ দিবে তাদের বিজ্ঞাপন বা প্রোডাক্ট আপনার নিউজলেটারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য।
-
পেইড সাবস্ক্রিপশনঃ কিছু পাঠক প্রিমিয়াম কনটেন্ট পড়ার জন্য সরাসরি সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে রাজি হন (যেমন Substack বা Patreon ব্যবহার করে)।
বিশ্বাসযোগ্যতা ও মানসম্মত কনটেন্ট নিউজলেটার আয়ের মূল চাবিকাঠি। পাঠকের আস্থা অর্জন করতে পারলে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ইনকাম সোর্সে পরিণত হতে পারে।
কীভাবে ইনকাম হয়ঃ
-
নিউজলেটার চালিয়ে নিয়মিত পাঠকদের তথ্য দেন।
-
তারপর স্পন্সরদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেন।
-
অথবা সাবস্ক্রিপশন বেইজড পেইড নিউজলেটার চালান (যেমনঃ Substack)।
করণীয়ঃ
-
একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট দিন।
-
স্পন্সর খুঁজে বের করুন যাদের টার্গেট গ্রাহক আপনার সাবস্ক্রাইবারদের মধ্যে।
উদাহরণঃ
“স্বাস্থ্য ও ফিটনেস ভিত্তিক ইমেইল নিউজলেটার চালিয়ে, আপনি হেলথ প্রোডাক্ট কোম্পানি থেকে স্পন্সর পেতে পারেন।”
আরো পড়ুনঃ গুগল থেকে আয় করার ১০টি কার্যকর উপায় – বিস্তারিত গাইডলাইন জেনে নিন।
৪। ফ্রিল্যান্স সার্ভিস মার্কেটিং করে ক্লায়েন্ট পাওয়া
ফ্রিল্যান্স সার্ভিস মার্কেটিং হলো ইমেইলের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বা সেবা সরাসরি সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি কার্যকর পদ্ধতি। এতে আপনি ওয়েব ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, SEO, গ্রাফিক ডিজাইন বা যে কোনো ফ্রিল্যান্স সার্ভিসের পরিচিতি ও অফার ইমেইল করে পাঠান। নিজের পোর্টফোলিও, পূর্ববর্তী কাজের উদাহরণ এবং ছাড় বা বিশেষ অফার যুক্ত করে ইমেইল পাঠালে গ্রাহকের আগ্রহ তৈরি হয়।
ফলোআপ ইমেইল পাঠানো, প্রফেশনাল প্রেজেন্টেশন এবং সাবজেক্ট লাইনে আকর্ষণ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ। এতে ক্লায়েন্ট আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করে এবং অনেকে সরাসরি হায়ারও করে। সঠিক টার্গেট করা ও মানসম্মত ইমেইল কনটেন্টই হলো এই মার্কেটিংয়ের মূল চাবিকাঠি। এটি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য খুবই কার্যকর ও লাভজনক উপায়।
কীভাবে কাজ করেঃ
-
ইমেইল পাঠিয়ে নিজের সার্ভিস (যেমনঃ কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডিজাইন, SEO) প্রমোট করেন।
-
আগ্রহী সাবস্ক্রাইবাররা আপনাকে হায়ার করেন।
করণীয়ঃ
-
নিজেকে প্রফেশনালভাবে পরিচয় দিন।
-
প্রেজেন্টেশন, পোর্টফোলিও ও ক্লায়েন্ট রিভিউ শেয়ার করুন।
-
ফলোআপ ইমেইল অবশ্যই পাঠান।
উদাহরণঃ
“আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনার হন, তাহলে সাবস্ক্রাইবারদের জন্য ১০% ছাড়ের অফার দিতে পারেন।”
৫। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক এনে Google AdSense থেকে আয়
Google AdSense হলো এমন একটি বিজ্ঞাপনভিত্তিক আয়ের প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনার ওয়েবসাইটে গুগলের স্বয়ংক্রিয় বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করা যায়। এজন্য সবচেয়ে জরুরি হলো ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ট্রাফিক (ভিজিটর) আনা। বেশি ট্রাফিক মানেই বেশি বিজ্ঞাপন দেখা ও ক্লিক হওয়ার সম্ভাবনা, ফলে বেশি আয়। ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট সাবস্ক্রাইবারদের পাঠাতে পারেন। এতে সাবস্ক্রাইবাররা সেই লিংকে ক্লিক করে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে, যার ফলে ট্রাফিক বাড়বে। নিয়মিত, মানসম্মত এবং SEO-বান্ধব কনটেন্ট তৈরি করে ইমেইলের মাধ্যমে শেয়ার করলে দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য ট্রাফিক পাওয়া যায়। আর এভাবেই আপনি ধাপে ধাপে Google AdSense থেকে ভালো অংকের আয় করতে পারেন।
ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলঃ
-
আকর্ষণীয় ইমেইল সাবজেক্ট
-
ভ্যালু যুক্ত কনটেন্ট
-
সঠিক CTA (Call to Action)
-
সময়মতো ফলোআপ ইমেইল
মনে রাখবেন, ইমেইল মার্কেটিং শুধু ইনবক্সে মেইল পাঠানো নয়-এটি আপনার ওয়েবসাইটের লাইফলাইন হয়ে উঠতে পারে!
পদ্ধতিঃ
-
আপনি যেসব কনটেন্ট ওয়েবসাইটে লিখেছেন, সেগুলোর লিংক ইমেইলে শেয়ার করুন।
-
ইমেইলের মাধ্যমে ভিজিটর বাড়লে, অ্যাডসেন্স রেভিনিউও বাড়বে।
করণীয়ঃ
-
কনটেন্ট এমন হতে হবে যাতে মানুষ ক্লিক করে পড়ে।
-
Call-to-Action (CTA) ব্যবহার করুন।
উদাহরণঃ
“আপনি যদি একটি ব্লগ চালান, ‘স্মার্টফোন কেনার গাইড’ ধরনের টপিক ইমেইলে পাঠিয়ে ট্রাফিক বাড়াতে পারেন।”
সফল ইমেইল মার্কেটিংয়ের কিছু টিপসঃ
ইমেইল মার্কেটিং সফল করার জন্য শুধু মেইল পাঠানোই যথেষ্ট নয়, বরং সঠিক কৌশল ও নিয়ম মেনে কাজ করতে হয়। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলো, যা আপনাকে ইমেইল মার্কেটিংয়ে সফল হতে সাহায্য করবেঃ
গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট দিনঃ
আপনার পাঠকদের কাছে এমন ইমেইল পাঠান যেগুলো তথ্যবহুল, মূল্যবান এবং তাদের সমস্যার সমাধান দিতে পারে। শুধুমাত্র বিক্রয়ের জন্য বা প্রচারের জন্য স্প্যাম মেইল পাঠালে পাঠক বিরক্ত হয়ে যেতে পারেন এবং সাবস্ক্রাইব ছাড়তেও পারেন।-
আকর্ষণীয় সাবজেক্ট লাইন ব্যবহার করুনঃ
ইমেইলের বিষয়বস্তু বা সাবজেক্ট লাইন এমন হওয়া উচিত যা পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করে। ভালো সাবজেক্ট লাইন পাঠকের ক্লিক রেট বাড়ায়। যেমন, প্রশ্ন বা কৌতূহল জাগানো বাক্য ব্যবহার করতে পারেন। -
নিয়মিত ও ধারাবাহিক ইমেইল পাঠানঃ
একদম বিরক্তিকর ফ্রিকোয়েন্সি এড়িয়ে চলুন। সপ্তাহে ১-২বার পাঠানো উপযুক্ত। নিয়মিত পাঠালে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে মানুষের মনে বিশ্বাস ও পরিচিতি গড়ে ওঠে। -
পার্সোনালাইজেশন করুনঃ
ইমেইলটি ব্যক্তিগত স্পর্শ দিন। যেমন, নাম দিয়ে স্বাগত জানানো বা আগের ক্রয়, আগ্রহ অনুযায়ী প্রোডাক্ট সাজেস্ট করা ইত্যাদি। এতে পাঠক অনুভব করবেন আপনি সরাসরি তাদের জন্য মেইল করছেন। -
স্প্যাম ফিল্টার এড়িয়ে চলুনঃ
ইমেইলে স্প্যাম ট্রিগার শব্দ (যেমন “ফ্রি”, “অফার”, “জমকালো ছাড়”) কম ব্যবহার করুন। স্প্যাম ফিল্টারে পড়লে আপনার ইমেইল গ্রাহকের ইনবক্সে পৌঁছাবে না। -
স্মার্ট কল-টু-অ্যাকশন (CTA) ব্যবহার করুনঃ
স্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় CTA যোগ করুন যেন পাঠক সহজেই বুঝতে পারে কী করতে হবে — যেমন ‘এখানে ক্লিক করুন’, ‘অর্ডার করুন’, ‘আরও জানুন’ ইত্যাদি। -
মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন নিশ্চিত করুনঃ
অধিকাংশ মানুষ মোবাইলে ইমেইল দেখে, তাই ইমেইল ডিজাইনটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে। ছোট ফন্ট, বড় বাটন, দ্রুত লোড হওয়া ইত্যাদি নিশ্চিত করুন। -
ইমেইল অটোমেশন ব্যবহার করুনঃ
Mailchimp, ConvertKit, ActiveCampaign এর মত টুল দিয়ে স্বয়ংক্রিয় ফলোআপ বা স্বাগতম ইমেইল পাঠানো যায়। এতে সময় বাঁচে এবং প্রভাবও বাড়ে। -
সাবস্ক্রাইবারদের প্রতিক্রিয়া নিনঃ
নিয়মিত ফিডব্যাক নিন, যেন আপনি বুঝতে পারেন আপনার কনটেন্ট কতটা কার্যকর হচ্ছে এবং কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। -
আইনি দিক মাথায় রাখুনঃ
স্প্যাম আইন ও ডেটা প্রোটেকশন নীতি মেনে চলুন। অনুমতি ছাড়া মেইল পাঠাবেন না, এবং সব ইমেইলে আনসাবস্ক্রাইব লিঙ্ক যোগ করুন।
এই টিপসগুলো মেনে চললে আপনার ইমেইল মার্কেটিং প্রচার কার্যকর হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বাসযোগ্য গ্রাহক গড়ে উঠবে। সফলতা ধাপে ধাপে আসে, তাই নিয়মিত পর্যালোচনা ও উন্নয়ন করে যেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রতিদিন অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম করার ১০টি কার্যকর উপায়!
উপসংহারঃ ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে সফল আয়ের সম্ভাবনা
প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন, ইমেইল মার্কেটিং শুধু মেইল পাঠানো নয়—এটি একটি সম্পর্ক গড়ে তোলার কৌশল। ইমেইল মার্কেটিং হল ডিজিটাল যুগের এক অনন্য শক্তি, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে লাভজনক আয় করার একদম কার্যকর উপায়। মাত্র কয়েকটি কৌশল মেনে ধৈর্য্য ও পরিকল্পনার সঙ্গে কাজ করলে, ইমেইল মার্কেটিং থেকে নিয়মিত ও স্থায়ী আয় তৈরি করা সম্ভব।
উপরোক্ত পাঁচটি সেরা উপায়—অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, নিজের ডিজিটাল পণ্য বিক্রি, স্পন্সরযুক্ত নিউজলেটার, ফ্রিল্যান্স সার্ভিস প্রমোট করা এবং ওয়েবসাইট ট্রাফিক বাড়িয়ে গুগল অ্যাডসেন্স আয়—প্রতিটি পদ্ধতি আলাদা দক্ষতা ও পরিকল্পনার দাবি রাখে। তবে সবকিছুর মূলমন্ত্র হচ্ছে বিশ্বস্ততা, গ্রাহকের প্রয়োজন বোঝা এবং তাদের সাথে ধারাবাহিক যোগাযোগ রাখা।
সঠিক ইমেইল তালিকা তৈরি এবং গ্রাহকদের মূল্যবান তথ্য দেওয়া মানেই হলো সম্পর্ক গড়ে তোলা। সম্পর্ক গড়ে উঠলেই বিক্রয় বা আয়ের পথ সহজ হয়। তাই শুধু বিক্রয়ের চিন্তা না করে, পাঠকদের জন্য মানসম্মত ও প্রয়োজনীয় কনটেন্ট দেয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি আজ থেকেই আপনার ইমেইল মার্কেটিং শুরু করেন, সাবস্ক্রাইবারদের বিশ্বাস জিততে পারেন এবং নিয়মিত কার্যকর কন্টেন্ট দিতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
স্মরণ রাখবেন, সফলতা রাতারাতি আসে না, কিন্তু সঠিক কৌশল ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইমেইল মার্কেটিং থেকে বড় আয়ের পথ উন্মুক্ত হয়।
তাই আজই শুরু করুন ইমেইল লিস্ট তৈরি, নিজের কনটেন্ট প্রমোট ও সফল ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন।
আপনার পছন্দের মাধ্যম কোনটি? কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না! আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন – হোক সবাই সচেতন!
আরও এমন আর্টিকেল পড়তে চাইলে জানাতে পারেন আমি লিখে দেব। প্রতিনিয়ত এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করুনঃ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url